নিজস্ব সংবাদদাতা - রায়গঞ্জ : গত ৩ রা অক্টোবর ২০১৮ বুধবার রায়গঞ্জের কর্নজোড়ায় জেলাপরিষদ ভবনে সর্বভারতীয় তৃনমূল কংগ্রেস পরিচালিত উত্তর দিনাজপুর জেলা পরিষদের বোর্ড গঠন প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ হল। জেলার তৃনমূল কংগ্রেসের নেতৃত্ব, কর্মী,সমর্থক, বর্তমান ও প্রাক্তন জেলাপরিষদ, পঞ্চায়েত সমিতি এবং গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্য সদস্যা সহ অনেকেই উপস্থিত ছিলেন। স্থানীয় এক ব্যক্তি বলেন আগে জেলায় জেলায় সভাধিপতি নির্বাচন হতো তাদের মনোনীত প্রার্থীদের মধ্যে দিয়ে জেলায়, কিন্তু এখন দেখা যাচ্ছে পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন জেলায় পঞ্চায়েত ভোটের পর প্রধান থেকে সভাপতি সভাধিপতি পদে কে বসবেন তার চুড়ান্ত সিদ্ধান্ত আসে খামে ভরা এক চিঠিতে। এখনেও অন্যথা হয়নি, দলের নির্দেশ মত, উত্তর দিনাজপুরের জেলা পর্যবেক্ষক শ্রী শুভেন্দু অধিকারী মহাশয় খামে ভরা এক দলীয় চিঠি পাঠিয়ে দেন পার্শ্ববর্তী মালদহ তৃণমূল জেলা সভাপতি মোয়াজ্জেম হোসেনের হাতে।
মোয়াজ্জেম হোসেন মহাশয় উত্তর দিনাজপুর জেলার সভাধিপতি নিবাচনে বৈঠকে উপস্থিত হয়ে সেই দলীয় চিঠির খাম খুলে সভাধিপতি পদে শ্রীমতি কবিতা বর্মন ও সহকারী সভাধিপতি পদে বিদায়ী জেলা পরিষদের তৃনমূল সদস্য জাভেদ আখতারের স্ত্রী ফারহাতের নাম ঘোষণা করেন। দলের রাজ্য নেতৃত্বের সিদ্ধান্তের কথা মাথায় রেখে সকল নির্বাচিত সদস্যগণ তাদেরকে সমর্থন করেন। সদ্য নির্বাচিত দুই পদাধিকারই বলেন, দলের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত, আমরা দলের এই সিদ্ধান্তকে যথাসাধ্য মর্যাদা দিয়ে আমাদের দায়িত্ব ও কর্তব্য পালন করে যাব।
কিন্তু সভাধিপতি ও সহ-সভাপতি নাম ঘোষণা হতেই জেলার হেভিওয়েট তৃণমূলের নেতা/নেত্রীদের মধ্যে অনেকেই হতভম্ব হতে দেখা যায়।
উত্তর দিনাজপুরের সভাধিপতি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে জেলার তাবড় তাবড় নেতারা আশায় তাকিয়ে ছিলেন, তাদের স্ত্রী, পুত্র, কন্যা বা ভাই এদের মধ্যে কেউ সভাধিপতি ও সহ-সভাধিপতি হবেন। কিন্তু এই জেলার জেলাপর্যবেক্ষক শ্রী শুভেন্দু অধিকারী মহাশয় সেই আশায় জল ঢেলে দিয়েছেন।
জেলার দাপুটে জনদরদী নেতা, বিধায়ক ও তৃণমূল জেলা সভাপতি শ্রী অমল আচার্য মহাশয় বলেন, দলের রাজ্য নেতৃত্বের সিদ্ধান্ত সবাইকে মানতে হবে। দলের নিয়ম মেনে আমাদের চলতে হবে। দলের ঊর্ধ্বে আমরা এখানে কেউ নয়, অতএব দল থেকে যে প্রস্তাব এসেছে তা আমাদের সবাইকে এক বাক্যে মেনে নিতে হবে।
উল্লেখ্য জেলার তাবড় তাবড় নেতাদের নিজস্ব আত্মীয় এবার এই সদ্য পঞ্চায়েত নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছিলেন এবং নির্বাচনে জয়ী হয়েছেন অনেকেই। তাদের মধ্যে জেলার সভাপতি মহাশয়ের কন্যা পুজা আচার্জী, জেলা যুব তৃণমূল সভাপতি গৌতম পালের স্ত্রী পম্পা পাল, করণদিঘি থেকে জয়ী হয়েছেন তৃণমূল বিধায়কের স্ত্রী শ্রীমতি বিপাশা দাস সিংহ, এই ব্লকের যুব তৃণমূল সভাপতি আজাদ আলীর স্ত্রী শেহেরাবানু বিবি, গোয়ালপোখর থেকে গোলাম রব্বানীর ভাই গোলাম রসূল, চাকুলিয়া থেকে এলাকার দাপুটে নেতা তৃণমূল নেতা জাহিদ আলম আরজুর স্ত্রী নিখাদ পারভীন, ইসলামপুর থেকে জয়ী চোপড়ার দাপুটে নেতা, বিধায়ক হামিদুল রহমানের মেয়ে আরজুনা বেগম।
স্থানীয় সুত্রে জানা যায় এই জেলা পরিষদের সভাধিপতি ও সহ-সভাধিপতি পদের দাবিদার হিসাবে এদের মধ্যেই পাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু এই সব জল্পনা-কল্পনার সমস্ত অবসান ঘটল জেলা পর্যবেক্ষকের চিঠির মাধ্যমে। স্থানীয় এক সুধী ব্যক্তিত্ব আমাদের প্রতিনিধিকে বলেন গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে জনগণের ভোটে হয় নির্বাচন, আর অন্য জেলার নেতার মাধ্যমে মনোনীত হতে হচ্ছে আর এক জেলার জেলার কর্মকর্তাদের পদের নির্বাচন।
উত্তর দিনাজপুর জেলা পর্যবেক্ষক তথা পরিবহনমন্ত্রী শ্রী শুভেন্দু অধিকারী মহাশয় গত ২৮শে অক্টোবর কলকাতায় দলীয় বৈঠকে পরিষ্কার বলেছিলেন, এবার কোন বিধায়ক বা মন্ত্রীর কোন আত্মীয়কে জেলা পরিষদের শীর্ষ আসনে বসানো হবে না এবং সেটাই তিনি করে দেখালেন। তাতেই জেলার অনেক নেতার মুখ চু হয়ে গেছে।
No comments:
Post a Comment