করোনাভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে হাসান বিধানসভার বিধায়ক এলাকায় পরিষেবায় নিরন্তর।
নিজস্ব সংবাদদাতাঃ রামপুরহাট: করোনাভাইরাস (Coronavirus) সংক্রমণ প্রতিরোধে বিধায়ক ( MLA) লকডাউনের সরকারি নিয়ম মেনে এলাকায় নিরন্তর পরিষেবা দিয়ে চলেছেন।মিল্টন রশিদ বীরভূম জেলার হাসান বিধানসভা কেন্দ্রের বিধায়ক। তিনি জাতীয় কংগ্রেসের একজন লড়াকু বলিষ্ঠ বিধায়ক হিসাবে যেমন পরিচিত, তেমনি তাঁর আরেকটি পেশা হল আইনজ্ঞ (advocate)।
তিনি আপাতত আইন পেশা বন্ধ করে এলাকায় প্রতিনিয়ত জনগণের পাশে এসে দাঁড়িয়েছেন। তিনি তাঁর সীমাবদ্ধ ক্ষমতার মধ্য দিয়ে হাসান বিধানসভার প্রতিটি অঞ্চলে সাধ্যমত জনগণের পরিষেবা ও দেখভাল করে চলেছেন।
মাড়গ্রামে ভোদল সেখ দীর্ঘদিন দুরারোগ্য রোগে ভুগছিলেন। সেই ভোদল সেখ বড়ো ভাই বন্ধুর মতো পেশায় পাইপ লাইন মিস্ত্রি, গতকাল মারা যান। তার অন্তিম সৎকারে উপস্থিত থেকে মাটি দিয়ে তাদের বিভিন্ন সমস্যার কথা শুনে সাধ্যমত নানাভাবে সমাধান করার চেষ্টা করেন। তারপরে রামপুরহাট হাসপাতালে রোগীদের দেখতে ছুটেন।
চলতি মাসের গত সোমবার ২০ তারিখে রুনা বিবি (35) মাড়াগ্রামের মেয়ে প্রতাপপুর গ্রামের গৃহবধু রামপুরহাট হাসপাতালে মারাগেলে করোনা ভাইরাসের পরীক্ষায় নেগেটিভ রিপোর্ট আসাই এলাকার মানুষ চিন্তামুক্ত। বিধায়ক মিল্টন রশিদ, রুনা বিবির অকাল প্রয়াণে গভীর দুঃখ প্রকাশ করেন এবং নিজে সরজমিনে থেকে মরদেহ পৌছানোর ব্যবস্থা করলেন।
আমাদের খবর সংগ্রাহক এভাবেই একদিন তাকে রাস্তায় দেখেন, তিনি প্রত্যেকের তাপমাত্রা মাফছেন। হাসনের এই কংগ্রেস বিধায়ক নিজ উদ্যোগেই দিল্লি থেকে আনিয়েছেন এক বিশেষ ধরনের থার্মোমিটার। চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় এই থার্মোমিটারের নাম 'ইনফারমা ডিজিটাল থার্মোমিটার''(Informa Digital Thermometer)। আমাদের সংবাদদাতা উনাকে জিজ্ঞাসা করেন, আপনি এইভাবে এই করোনাভাইরাস সংক্রমণে চারিদিকে তোলপাড় অথচ আপনি নির্দ্বিধায় সকলের দেখভালের জন্য ছুটে বেড়াচ্ছেন হাসপাতলে, কখনো এলাকায় আপনার কি ভয় হয় না?
উত্তরে তিনি বলেন, আমি এলাকার বিধায়ক। আমাকে এলাকার জনগণ নির্বাচিত করেছেন ভোট দিয়ে, যেন বিপদে আপদে আমি তাদের পাশে থাকতে পারি। তাই এই মুহূর্তে আমার এটাই মনে হয়েছে যে আমার এখন পাশে থাকা দরকার। তারা আমার কাছে বিধায়ক হিসাবে এটা আশা করতেই পারেন। আমি দলমত নির্বিশেষে আমার সাধ্যমত এবং সরকারি লকডাউন এর নিয়ম মেনে জনগণের পাশে থাকার এক ক্ষুদ্র প্রয়াস। এটা আমার কর্তব্য আমার বিবেক ও বুদ্ধিতে আমার এটাই মনে হয়েছে, এই সময়ে আমাকে তাদের পাশে থাকতে হবে। তাদের দেখভালের দায়িত্ব নিতে হবে এবং সেই সূত্রে আমি প্রতিদিন প্রতিনিয়ত কখনো হসপিটাল হাসপাতলে কখনো দুর্গত মানুষের পাশে বা কখনো অসুস্থ মানুষের দেখাশোনা করার দায়িত্ব নিয়ে এগিয়ে আসি এবং এটা আমাকে ভালো লাগে।
তাঁর এলাকার একজন শিক্ষক বলেন, সকাল হলেই তিনি বাড়ি থেকে বেরিয়ে পড়েন এবং হাসান বিধানসভা এলাকার বিভিন্ন অঞ্চলে পালা করে তিনি দলমত নির্বিশেষে ছোট থেকে বড় সকলের ইনফারমা ডিজিটাল থার্মোমিটার দিয়ে তাপমাত্রা মাপেন। অসুস্থ মানুষদের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করেন। তিনি আরোও বলেন, এরকম করোনাভাইরাস সংক্রমণের আবহের মধ্যেও তিনি প্রায় প্রতিদিন হাসপাতলে অসুস্থ মানুষদের দেখতে যান।
বিধায়ক মিল্টন রশিদ পেশায় চিকিৎসক না হলেও বিগত এক মাস ধরে নিজের বিধানসভায় নিরন্তর মানুষের দেহের তাপমাত্রা পরীক্ষা করে চলেছেন। এলাকার সকল প্রকার মানুষের তিনি নিরন্তর সেবা দিয়ে চলেছেন।
এলাকার একজন ডাক্তার বলেন, বিধায়ক মিল্টন হয়তো ডাক্তার নন, তার করোনা ভাইরাস টেস্টিং কিটও জোগাড় করার ক্ষমতা হয়তো নেই, তবুও তিনি বিজ্ঞানের ছাত্র হওয়ায় তাঁর সীমিত অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে করোনা টেস্ট-এর প্রাথমিক লক্ষণ হিসেবে বিগত পনেরো দিন ধরে নিজের বিধানসভা এলাকায় করোনা ভাইরাস সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে মানুষের দেহের তাপমাত্রা পরীক্ষা করে চলেছেন তার পরীক্ষা থেকে বাদ যাচ্ছেন না ডাক্তার, স্বাস্থ্যকর্মী, পুলিশ এমনকি বিএমওএইচ এবং হাসপাতালের কর্মীগণও।
Miltan Rashid - Hansan Bidhan Sabha, Birbhum West Bengal.
No comments:
Post a Comment