নিজস্ব সংবাদদাতা: মালয়েশিয়ায় মালদা জেলার বহু শ্রমিক আটক পরিবার দিশহারা, জেলার সাংসদ মৌসম নূর পরিবারের পাশে।
পশ্চিমবঙ্গের মালদা জেলার ইংরেজবাজার ব্লকের অধীন কোতোয়ালির পাশে নরহাট্টা গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত নয়জন শ্রমিককে মালয়েশিয়াতে তাদের পাসপোর্ট বাজেয়াপ্ত করে অবৈধভাবে আটক করা হয়েছিল। মালদা জেলা কংগ্রেস সভানেত্রী তথা সাংসদ মৌসম বেনজির নূর এই ঘটনা জানার সঙ্গে সঙ্গে আটক শ্রমিকদের পরিবারের সঙ্গে কথা বলেন এবং তাদের দেশে ফিরিয়ে আনার সব রকম ব্যবস্থা করবেন।
বুধবার (১০.১০.২০১৮) সাংসদ মৌসম নূর সরেজমিনে সব কিছু জানার জন্য তাদের সঙ্গে দেখা করতে আসেন। কেন তাদেরকে সেখানে আটকে রাখা হয়েছিল? বা ওখানে কি কি অসুবিধা হয়েছিল? ইত্যাদি, ইত্যাদি জানার জন্য।
সাংবাদিক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, তাদেরকে ওখানে কাজ করার কোন বেতন না দিয়ে আটকে রাখা হয়। তাদের ফিরিয়ে আনার ব্যাপারে আমাদের দেশের 'এক্সটার্নাল আফেয়ারস মিনিস্ট্রি'র সঙ্গে যোগাযোগ করেন, যারা বিভিন্ন দেশের এম্বাসির সঙ্গে যোগাযোগ রাখেন তাদেরকে তিনি চিঠি করেন। তারপরে মালয়েশিয়ায় ভারতীয় হাইকমিশন, মালয়েশিয়ার সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ করে, সেই আটকেপরা লোকগুলোকে ভারতীয় হাইকমিশন নিজেদের হেফাজতে নিয়ে নেয়, অবশেষে দেশে ফেরার সমস্ত রকম ব্যবস্থা করেন।
তিনি খুব দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, এরা কেউ সেরকম লেখাপড়া জানে না, এদেরকে দিয়ে কাগজে সই করিয়ে নিয়েছে, কিন্তু কত দিনের ভিসা ১০ দিনের ভিসা, না ছয় মাসের ভিসা তা এরা কিছুই জানতে পারে না। এমনকি তাদের ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে যায়, মাত্র ১৫ দিনের ভিসায় তাদের নিয়ে যাওয়া হয়েছিল মালয়েশিয়ায়। কিন্তু সেই দেশের নিয়ম কানুনতো আলাদা। সে দেশের নিয়ম অনুযায়ী তো চলতই হবে। সেই নিয়ম অনুযায়ী তারা আটকা পড়ে গেছে, খুব দুঃখজনক ব্যাপার।
ফেরত আসা শ্রমিকদের থেকে জানা যায়, মনিরুল ইসলাম নামে এক দালাল তাদেরকে এখান থেকে নিয়ে যায়। মোট ১৫ জন শ্রমিককে সেখানে পাঠিয়েছিল। তাদের দলে ছিল ৯ জন। কোতোয়ালির পাশে নরহাট্টা অঞ্চলের ৮ জন এবং রতুয়া ব্লকের ১ জন। নাসিরুল ইসলাম, মজাবুল হক, নজরুল ইসলাম, আব্দুল ওয়াহাব, নুরজামাল, মোহাম্মদ আবদুল হক এবং তারেন সেক ও আনারুল হক বাবুপুরের।
আরো জানা যায়, ওখানে গিয়ে তাদের কাজের কোন টাকা দেওয়া হয় নি, তাদেরকে বিক্রি করে দেওয়ারও একটা প্রচেষ্টা চলছিল। এ বিষয়ে এজেন্সির একটা যোগসাজশ আছে বলে তারা জানায়। প্রত্যেকের প্রায় ৫০ হাজার করে টাকা দিতে হয়েছে এজেন্সির এক দালাল মনিরুল ইসলামকে এবং আসার সময়ও তাদের হাতে কোনো টাকা ছিল না, এরা সকলেই গত সেপ্টেম্বরের ৩০ তারিখে ভারতে এসে পৌঁছেছেন, সাংসদ মৌসম বেনজির নূরের সহায়তায়। এলাকার স্থানীয় জনগণ আমাদের প্রতিবেদকে বলেন, মৌসমদির প্রচেষ্টায় শূন্য মায়ের কোল পূরণ হল। আর কেউ এ ব্যাপারে এগিয়ে আসেন নি।
সাংসদ মৌসম নূর আরোও বলেন, এ ব্যাপারে আমাদের লোকাল অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ ডি এম দের কেউ বলবো, এই ধরনের ঘটনার ব্যাপারে মালদহের বিভিন্ন এলাকায় সচেতনতা কর্মসূচি করা দরকার।
No comments:
Post a Comment